বিস্তারিত আজগর আলী মানিক এর রিপোর্টে 

তৃতীয় লিঙ্গ তথা হিজড়ারা আজকাল আর আগের মতো নেই। অর্থের লোভে অনেক নকল হিজরাদের উৎপাত শুরু হয়েছে। যার কারণে বদনাম হচ্ছে আসল হিজরাদের। 

সুযোগে কিছু মানুষ হিজড়া সেজে বেপরোয়াভাবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পুরো রাঙ্গুনিয়া। এরা চাঁদা না পেলে যেকোনো ধরনের অপরাধ করতে পিছপা হচ্ছে না।  

বৌদি হিজড়া মোটা অঙ্কের টাকার লোভ দেখিয়ে হিজড়া তৈরি করছে বলে জানা গেছে। ফলে দিন দিন যেমন হিজড়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে তেমনি নকলের ভিড়ে আসল হিজড়াদের চেনা দায় হয়ে গেছে।

এর নাম হচ্ছে বৌদি হিজড়া। সে হিজরাদের গডফাদার সেজে আছে। সে হলো নকল হিজরাদের গডফাদার  বৌদি।  এর নিয়ন্ত্রণে পুরা রাংগুনিয়া চলে । বৌদি একজন সাধারণ মানুষের মত। উনি কোনোই হিজড়া না। হিজড়া সজে টাকা তুলে আর আমোদ ফুর্তি করে। আর ঠকে যায় পিংকি হিজরা। রাঙ্গুনিয়ার আসল হিজরা পিংকি।

নকল বৌদি হিজরার আরও নকল হিজরাদের সহযোগী রয়েছে। এর নাম হচ্ছে মোহিনী প্রকাশ নাম হচ্ছে সুজন। বাড়ি হচ্ছে বরিশাল।

এখানে যেটা ছোট ওইটার নাম হচ্ছে পিঞ্জর। আসল নাম হচ্ছে রুবেল ।  এর বাড়িও বরিশাল পটুয়াখালী। আর যেটা বড় ওইটা হচ্ছে সিনথিয়া প্রকাশ।  আসল নাম হচ্ছে সজীব। বাড়ি  সিলেট মাধবপুর।

নকল হিজরাদের বাড়ি ৯ নং ওয়ার্ড  । এদেরকে ধরার জন্য প্রশাসনের অনুরোধ জানাচ্ছে সর্বসাধারণ এবং সাংবাদিক ভাইদের সহযোগিতা চাচ্ছে আপামর জনসাধারণ।

পিংকি হিজরা বলেন, আসল হিজড়ারা বাসে বাসে, সিগন্যালে এবং কোনো পরিবহনে টাকা তোলে না। কিন্তু মাথায় নকল চুল লাগিয়ে, মেকআপ করে একটা শ্রেণির লোক ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় গাড়িতে উঠে মানুষের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে। তারা আসলে হিজড়া না। তারা হিজড়া সেজে এসব করে। এর দুর্নাম আসল হিজরাদের সইতে হয়।

নকল হিজড়া সিন্ডিকেট বৌদি হিজরাদের দল হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এসব হিজড়াদের রেটও বেশি। তারা মানুষের সঙ্গে খারাপ আচরণও বেশি করে। এরা শুধু চাঁদাবাজিই করছে না, কেউ কেউ অস্ত্র, মাদক ও পতিতাবৃত্তির সঙ্গেও জড়িত।

চট্টগ্রামে আসল হিজরাদের একজনের নাম  পিংকি হিজড়া। সে রাঙ্গুনিয়া এলাকায় জন্মগতভাবে বসবাস করে। পেশাদার হিজারা হিসেবে একজনই আছে। তাকে টাকা না দিয়ে নকল  হিজরাদেরকে টাকা দিচ্ছে লোকজন । প্রশাসনের কাছে জবাব চাই। এলাকাবাসীর দাবি সবাইকে টাকা দেওয়া সম্ভব না। টাকা দিলেও পেশাদার হিজরা  পিংকি দাশ কে দিবো।

সংবিধান অনুযায়ী দেশের সব মানুষ সমান। ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, বাসস্থান বা পেশাগত কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি বৈষম্য করা যাবে না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আমাদের দেশে আসল হিজড়া জনগোষ্ঠীর লোকজন চরম অবহেলার শিকার।

সরকার ২০১৩ সালে হিজড়াদের ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তাদের ভোটাধিকারও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরও সমাজে তাদের অবস্থানের তেমন কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। সমাজে তারা প্রতিনিয়ত তুচ্ছতাচ্ছিল্যের শিকার হয়। নিজ পরিবারেও তারা অচ্ছুত ও অনাদৃত। বাংলাদেশের উত্তরাধিকার আইন এখনো নারী-পুরুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকার কারণে তারা সম্পত্তির উত্তরাধিকার হতে পারে না। বেশির ভাগ হিজড়াই কোনো সম্মানজনক জীবিকায় নেই, ভিক্ষা ও চাঁদাবাজিই তাদের মূল পেশা। কেউ কেউ আবার যৌনকর্মকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরই নকল হিজরাদের উৎপাত বন্ধ করতে হবে। কেউ-ই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। কেউ হয়রানির শিকার হয়ে থানায় অভিযোগ করলে সম্ভাব্য  ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশা করা যায় ।

আর রাঙ্গুনিয়ার আসল হিজরা পিংকি দাশকে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সহযোগীতায় এগিয়ে আসার আহ্বান রইল।